1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

৩০০ বছর ধরে জনশূন্য ‘ভুতুড়ে’ গ্রাম

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২২
  • ৩০৭ বার পঠিত

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক :: গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে অসংখ্য ঘরবাড়ি। তবে কোনোটাতেই লোকজনের দেখা নেই। প্রায় ৩০০ বছর ধরে এ ভাবেই দাঁড়িয়ে কুলধারা!

লোকমুখে প্রচলিত, এক রাতেই জনশূন্য হয়ে গিয়েছিল রাজস্থানের জনবহুল এই গ্রামটি। অনেকের দাবি, জনমানবহীন কুলধারায় ঘুরে বেড়ায় অতৃপ্ত আত্মা! সেখানে বসতি গড়ার চেষ্টা করলেও নানা ভৌতিক কাণ্ডকারখানার মুখে পড়তে হয়েছে। এমনও দাবি স্থানীয়দের। মরুরাজ্যে সোনার কেল্লার শহর জয়সলমের থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার পশ্চিমে এগোলেই দেখা মেলে কুলধারার। এককালে তা পালীবাল ব্রাহ্মণদের বসতি বলে পরিচিত ছিল।

কুলধারায় দেখা মেলে না কোনো মানুষের। তবে জায়গাটি যাতে বেহাত হয়ে না যায়, সে বন্দোবস্তও করেছে সরকার। ইদানীং তা ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সংরক্ষণ (আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)-এর অধীনে রয়েছে। এক সময় অনেক জমজমাট ছিল কুলধারা। কেন এ হাল হল গ্রামটির? এ নিয়ে নানা মুনির নানা মত। অনেকের মতে, রাজরাজড়ার যুগে জয়সলমেরের প্রধানমন্ত্রী সালিম সিংহের কুনজর পড়েছিল গ্রামপ্রধানের মেয়ের দিকে। জোর করে তাঁকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন সালিম। সে জন্য গ্রামবাসীদের হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন।

সালিম নাকি যা চাইতেন তা যে কোন মূল্যে নিজের করে নিতেন। জনশ্রুতি আছে, গ্রামপ্রধানের মেয়েকে তার হাতে তুলে না দিলে ফল ভাল হবে না বলে সতর্কও করেন তিনি। এর অন্যথা হলে গ্রামবাসীদের খাজনা বাড়িয়ে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দিয়েছিলেন।

বিপদ বুঝে তড়িঘড়ি ৮৫টি গ্রামের পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পালীবাল ব্রাহ্মণেরা। সেখানেই নাকি সিদ্ধান্ত হয়, গ্রামপ্রধানের মেয়েকে সালিমের থেকে বাঁচাতে রাতারাতি গ্রাম ছেড়ে পালাবেন বাসিন্দারা। তা-ই করেছিল কুলধারা।

এক রাতেই ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল গ্রাম। এখানে ওখানে কয়েকটি গাছ ছাড়া প্রাণের কোন চিহ্ন নেই এ গ্রামে। তবে এখানে কৌতূহলী পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে।

সালিম এবং গ্রামপ্রধানের মেয়ের কাহিনিতে অনেকে আবার প্রেমের অনুষঙ্গও খুঁজে পেয়েছেন। তাঁদের দাবি, গ্রাম প্রধানের মেয়ের প্রেমে পড়েই তাঁকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন সালিম। তবে তাতে নারাজ ছিলেন গ্রামবাসীরা। গ্রাম ছাড়ার আগে পরিবারের সম্মানরক্ষায় ওই মেয়েটিকে খুন করেন তারা।

অন্য এক দলের মত, গ্রামবাসীদের থেকে এত চড়া খাজনা আদায় করতেন সালিম যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। তবে সালিমের সিদ্ধান্তের বিরোধিতাও করতে পারেননি। তাই উপায় না দেখে কুলধারা ছেড়ে অন্য জায়গায় বসতি গড়েন গ্রামবাসীরা। রহস্যের টানে কুলধারায় বহু পর্যটকই পা রাখেন। তাঁরা জানিয়েছেন, কুলধারায় সারি সারি ঘরবাড়ি এখনও প্রায় অক্ষত। কয়েকটি ঘরবাড়ির চাল উড়ে গেলেও মাটির দেওয়াল পড়ে যায়নি। তবে অনেকের সেখানে অস্বস্তিকর অনুভূতি হয়েছে বলে দাবি। স্থানীয়দের দাবি, আজও গ্রামপ্রধানের মেয়ের অতৃপ্ত আত্মা ঘুরে বেড়ায় কুলধারায়। যদিও এ নিয়ে তর্ক আজও অব্যাহত।

তবে লোককথা ছাড়াও ইতিহাসে কুলধারার উল্লেখ রয়েছে। ত্রয়োদশ শতকে রাজস্থানের পালী শহর থেকে জয়সলমের এলাকায় কুলধারা গ্রামে বসতি গড়েন সেখানকার বাসিন্দারা। ১৮১৫ সালে তা জনশূন্য হয়ে যায়।

১৮৯৯ সালে লক্ষ্মী চন্দের লেখা ‘তারিখ-ই-জয়সলমের’ বইটিতে কুলধারার বিষয়ে নানা তথ্য পাওয়া যায়। তাতে লেখা রয়েছে, এ গ্রামে কড়হান নামে এক পালীবাল ব্রাহ্মণ প্রথম বসবাস করতে শুরু করেছিলেন।মূলত জোধপুরের পালীবাল সম্প্রদায়ের ব্রাহ্মণেরাই এ গ্রামে বসবাস করতেন। কৃষিকাজের পাশাপাশি ব্যবসাবাণিজ্যের মাধ্যমে আয় করতেন তাঁরা।

কুলধারায় অন্তত ৪১০টি ঘরবাড়ির প্রায় ভগ্নপ্রায় অবস্থায় রয়েছে। সেই সঙ্গে তিনটি সমাধিক্ষেত্রও পাওয়া গিয়েছে। রয়েছে একাধিক কুয়ো। তবে তা থেকে পানি ভরার লোকজন নেই। ৩০০ বছর আগেকার সেই গ্রাম থেকে রাতারাতিই নাকি লোকজন গায়েব হয়ে যায়।

 

 

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..